শুভ নববর্ষ ২০১৭



নববর্ষ  মানে  বিগত  দিনের গ্লানি মুছে ফেলে   নতুন বছরকে  সাদরে গ্রহণ করে  নেয়া  । বিগত  দিনে  যে স্বপ্ন গুলো  পূরণ করতে  পারিনি তা  পুরুণের  লক্ষে  এগিয়ে  চলা ।এবং আগামীর  দিন গুলোকে  চ্যালেঞ্জ  হিসাবে  নেয়া  ।
নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে  । এই  নতুন বছরকে  কেন্দ্র  করে  কোথাও  কোথাও  মেলাও  বসে  । আবার  কোনো  কোনো  গ্রাম  গঞ্জে  বিভিন্ন ধরণের  খেলারও আয়োজন করা  হয়ে থেকে  । যেমন  ঘোড়ার  দৌড়  প্রতি যোগিতা  , লাঠিয়াল  বাহিনীর  লাঠি  খেলা ,গ্রাম বাংলার  নৌকা  বাইচ  ইত্যাদি  ।
কোথাও কোথাও  আবার নতুন  বছরকে কেন্দ্র করে  বিভিন্ন ধরণের  সাংস্কৃতিক  অনুষ্ঠানের  ও  মঞ্চ  নাটকের ব্যবস্থা করা হয়  ।
সকাল থেকেই এ স্থানে লোকজনের আগমন ঘটতে থাকে। শিশু-কিশোররা সকাল থেকেই উদগ্রীব হয়ে থাকে মেলায় আসার জন্য। এক দিনের এ মেলাটি জমে ওঠে দুপুরের পর থেকে। হাজারো লোকের সমাগম ঘটে। যদিও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কারণে এ মেলার আয়োজন করা হয়। তথাপি সব ধর্মের লোকজনেরই প্রাধান্য থাকে এ মেলায়। এ মেলায় শিশু-কিশোরদের ভিড় বেশি থাকে। মেলায় নাগরদোলা, পুতুল নাচ ও সার্কাসের আয়োজন করা হয়।
এ ছাড়া সোনারগাঁ থানার পেরাব গ্রামের পাশে আরেকটি মেলার আয়োজন করা হয়। এটির নাম ঘোড়ামেলা। লোকমুখে প্রচলিত যামিনী সাধক নামের এক ব্যক্তি ঘোড়ায় করে এসে নববর্ষের এই দিনে সবাইকে প্রসাদ দিতেন এবং তিনি মারা যাওয়ার পর ওই স্থানেই তাঁর স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হয়। প্রতিবছর স্মৃতিস্তম্ভে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একটি করে মাটির ঘোড়া রাখে এবং এখানে মেলার আয়োজন করা হয়। এ কারণে লোকমুখে প্রচলিত মেলাটির নাম ঘোড়ামেলা। এ মেলার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে নৌকায় খিচুড়ি রান্না করে রাখা হয় এবং আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই কলাপাতায় আনন্দের সঙ্গে তা ভোজন করে। দিনের সব  আয়োজন  শেষে  সবাই  যখন  ক্লান্ত  হয়ে  বাড়ি ফেরে  তখন ঘুম শেষে  নতুন করে আবারো হাত ছানি  দেয়  নতুন দিনের  ।

No comments :

Post a Comment